বর্তমান বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মফস্বল
এলাকার স্কুল গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই জানে না যে, দেশের সর্বোচ্চ
গুনগত মান সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে ক্যাডেট কলেজ গুলো অন্যতম। আর সেখানে
চান্স পাওয়ার মতো অনেক শিক্ষার্থীই আছে আমাদের এই মফস্বলের স্কুল গুলোতে, কিন্তু ক্যাডেট
কলেজ কি বা কত গুলো ক্যাডেট কলেজ আছে অথবা সেগুলো কোথায় কোথায় অবস্থিত এই সংক্রান্ত
তথ্যের যথেষ্ঠ অভাব থাকায় মফস্বলের গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থায় কলেজে উঠতে উঠতে ছেলে
মেয়েরা টিকটক হিরো হিরোইন হয়ে যাচ্ছে, আর কলেজে উঠেই বাংলা সিনেমার নায়ক, নায়িকা হয়ে
প্রেম নামক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে কি সব হাস্যকর ফেসবুক পোষ্ট করে তা আর বলার মত নয়,
হয় প্রেমে ব্যর্থ হয় নয়তো, ছাত্র রাজনীতি করে খুব সহজেই মাদক আসক্ত হয়ে বা তামিল হিরোদের
মত মটরসাইকেল ড্রাইভ করতে যেয়ে অকালেই ঝড়ে যাচ্ছে অনেক উজ্জল ভবিষ্যত।
এদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়াতে পড়ালেখা জন্য
আর কিছু অর্জন করুক আর না করুন এক খান স্মার্ট ফোনের মালিক অধিকাংশই, বলবো না সবাই।
বাবা মা ভাবছে ছেলে আমার খুব পড়ছে, কিন্তু আসলে তো তারা গেমস, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
আর নিজেকে বড় ভাবতে যেয়ে অথবা অনলাইনে ইনকাম করতে যেয়ে নিষিদ্ধ এডাল্ট কনন্টেট এ ব্যস্ত
সময় পার করছে। আর এভাবেই নীতি নৈতিকতা বির্বজিত হয়ে ধ্বংসের পথে আমাদের আগামীর প্রজন্ম।
আর এই অবস্থায় অভিভাবক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে শক্ত ভূমিকা রাখার কথা ছিলো তাতে
রয়েছে বিরাট অবহেলা।
কিন্তু এত সমস্যা শংকুল অবস্থার মধ্যেও সকল ক্যাডেট
কলেজের শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত পারফেক্ট অবস্থায় থেকে নিজেদের এবং দেশের মান অক্ষুন্ন
রেখে চলেছে, তাদের অত্যাধুনিক শিক্ষা প্রদান
পদ্ধতি ও হাই কোয়ালিফায়েড শিক্ষকদের জন্য।
আর এতখানি জানার পর কার না ইচ্ছে করে এমন উন্নত
পরিবেশ সমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থী হতে অথবা একজন ক্যাডেটের গর্বিত বাবা মা
বা অভিভাবক হতে!!!!
আর এই জন্য ক্যাডেট কলেজ গুলো সম্পর্কে জানতে
হবে যে, কোনটা কোথায় অবস্থিত, তখন পরিকল্পনা করতে পারবেন, প্রস্তুতি নিতে পারবেন যে,
কোনটাতে ভর্তি হওয়া আপনার সন্তানের জন্য সুবিধা জনক। কোন কলেজের কেমন সুযোগ সুবিধা
রয়েছে।
ভর্তি পরিক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য আগেই ঔ কলেজের
আগের প্রশ্নপত্র সম্পর্কে ধারনা নিতে পারবেন।
কয়েক ধাপের প্রতিযোগিতামূলক বাছাই প্রক্রিয়ার
কারণে ক্লাস সিক্সে ওঠার সাথে সাথেই ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে
দেখা যায় অনেক ছাত্র-ছাত্রীকেই। আর হবে না-ই বা কেন? দেশের প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
হিসেবে নিয়মিতভাবে জায়গা করে নিতে দেখা যায় ক্যাডেট কলেজগুলোকে। গুণগত শিক্ষা, মানসম্মত
আবাসিক সুবিধা এবং কঠোর নিয়মতান্ত্রিক পরিবেশই সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন এই প্রতিষ্ঠানের
সাফল্যের পেছনে মূল চাবিকাঠি। এজন্যেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সবারই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু
হিসেবে থাকে ক্যাডেট কলেজগুলো।
ক্যাডেট কলেজের খুঁটিনাটি :
বাংলাদেশে মোট ক্যাডেট কলেজের সংখ্যা ১২টি। এর
মধ্যে ৯টি ছেলেদের ক্যাডেট কলেজ, বাকি ৩টি মেয়েদের জন্য। সর্বপ্রথম ক্যাডেট কলেজ
প্রতিষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ক্যাডেট কলেজটি
আয়তনের দিক থেকেও সর্ববৃহৎ।
মেয়েদের জন্য
বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ক্যাডেট কলেজ হলো ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ। পরবর্তীতে
ফেনী ও জয়পুরহাটে মেয়েদের জন্য আরো দুটি ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ছেলেদের অন্য
৮টি ক্যাডেট কলেজ যথাক্রমে ঝিনাইদহ, মির্জাপুর, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, বরিশাল, পাবনা
ও কুমিল্লায় অবস্থিত।
ক্যাডেট কলেজগুলো শতভাগ আবাসিক এবং এদের মূল
লক্ষ্য সেনাবাহিনীর জন্য ভবিষ্যতে সদস্য প্রস্তুত করা। কাজেই খুব ছোটোবেলা থেকে ক্যাডেটদেরকে
শারীরিক ও মানসিকভাবে গড়ে তোলা হয় সেনাবাহিনীতে যোগদানের উপযুক্ত করে। ক্যাডেট কলেজে
বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতি ইংরেজি ভার্সনের যা এনসিটিবি প্রণীত শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে।
Comments
Post a Comment